নবজাতকের নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট

নবজাতকের নিউবর্ন স্ক্রীনিং (Newborn Screening) টেস্ট এবং কিছু সতর্কতা নিশ্চিত করবে শিশুর আজীবন শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা

নবজাতকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথম স্ক্রীনিং টেস্টই হলো নিউবর্ন স্ক্রীনিং (Newborn Screening)। এটি খুবই সহজ একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগের লক্ষণ প্রকাশের আগেই রোগ সনাক্ত করা সম্ভব। জন্মকালে নবজাতককে আপাতঃদৃষ্টিতে সুস্থ মনে হতে পারে। কিন্তু তার মধ্যে হয়তো কোনো গোপন সমস্যা (জেনেটিক ও মেটাবলিক সমস্যা, ইনবর্ন এরর অব মেটাবলিজম, হিমোগ্লোবিনোপ্যাথিস, এন্ডোক্রাইন ডিসঅর্ডার, কার্বোহাইড্রেট ডিসঅর্ডার, এ্যামাইনো এসিড ডিসঅর্ডার/ ফ্যাটি এসিড ডিসঅর্ডার) রয়ে গেছে যা খালি চোখে বোঝার উপায় নেই। এই সমস্যাগুলো সনাক্ত করা না গেলে শিশুর বেড়ে ওঠা হবে মন্থর, মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়া থেকে শুরু করে মানসিক প্রতিবন্ধিকতা, গুরুতর এ্যানিমিয়া, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা, মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পরিবারের অন্য কারো না হলেও এই জটিল রোগগুলোতে শিশু আক্রান্ত হতে পারে।

জন্মগত জেনেটিক, মেটাবলিক রোগ যেমন থ্যালাসিমিয়া, কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডইজম, গ্যালাক্টোসেমিয়া ইত্যাদি সনাক্ত করার একটি সহজ পদ্ধতি নিউবর্ন স্ক্রীনিং।

টিকা’র এর মত নিউবর্ন স্ক্রীনিং অনেক প্রাণঘাতি রোগের বিরুদ্ধে শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী নবজাতকের জন্মগত/জেনেটিক ত্রুটি

“সমস্ত শিশু মৃত্যুর ২০-৩০% জন্মগত ত্রুটি বা জেনেটিক ডিসঅর্ডারের কারণে হয়”

Ref: Berry RJ, Buehler JW, Strauss LT, et al. 1987. Birth weight-specific infant mortality due to congenital abnormalities, 1960 and 1980. Public Health Report 102:171-81

বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুহার ও নবজাতকের স্বাস্থ্য তথ্য

বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫.৭টি

Ref: Socioeconomic status and the prevalence of mental retardation in Bangladesh. Islam S1, Durkin MS, Zaman SS.

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইন্ডিয়ান জার্নাল অব পেডিয়াট্রিক্স, ভলিউম ৫৩, ইসু ৪

0 %
মানসিক প্রতিবন্ধকতার প্রধান কারণ জেনেটিক ব্যাধি

বাংলাদেশে নবজাতকের শারীরিক/মানসিক প্রতিবন্ধকতার হার

DISABILITY IN BANGLADESH: Prevalence and Pattern, BANGLADESH BUREAU OF STATISTICS (BBS), November 2015

সর্বোচ্চ শারীরিক/মানসিক প্রতিবন্ধকতার হার রয়েছে এমন শীর্ষ ৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও (৯.১%) রয়েছে

Ref: United Nations ESCAP, Midpoint Review of the Asian and Pacific Decade of Persons with Disabilities, 2013-2022

বিশ্বের সবচেয়ে সফল ও আধুনিক “নিউবর্ন স্ক্রীনিং ” পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর সম্ভাব্য শারীরিক ত্রুটি/রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন

বাংলাদেশে জন্মগত রােগের বর্তমান পরিস্থিতি

সূত্র: এনলিস অফ ক্লিনিকাল এন্ড ল্যাবরেটরি রিসার্চ, ভলিউম ৪, ইস্যু ২:৯৯; আমেরিকান জার্নাল অব ইপিডেমিওলজি, ভলিউম ১৫২, ইস্যু ১১

0 %
বাংলাদেশি শিশু জন্মগত/জেনেটিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে

বাংলাদেশ ও বিশ্বে অটিজম রোগের প্রকোপ

সারা বিশ্বে প্রতি ১৫০ জন শিশুর মধ্যে ১ জন এবং বাংলাদেশে প্রতি ১২৫ জন শিশুর মধ্যে ১ জন অটিজমে আক্রান্ত

Ref: www.autismspeaks.org

বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রতি ১৫০ জন শিশুর মধ্যে একজন অটিজমে আক্রান্ত। সম্মিলিতভাবে শিশুদের ক্যান্সার, শিশুদের ডায়াবেটিস এবং শিশু-কিশোরদের এইডস রোগের চেয়েও অটিজমের হার বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১.৫ মিলিয়ন শিশুর অটিজম রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ৮ জন শিশুর মধ্যে অটিজম রয়েছে। প্রতিবছর এই হার আগের চেয়ে ১০-১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অটিজম সনাক্তকরণ পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার উন্নতি এবং পরিবেশের পরিবর্তনই অটিজমের এই হার বৃদ্ধির কারণ। মেয়েদের তুলানায় ছেলে শিশুদের মধ্যে অটিজম হবার সম্ভাবনা ৩-৪ গুণ বেশি। অ্যাসপার্জার্স সিনড্রোমের ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ে শিশুর আক্রান্তের অনুপাত ১০:১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রতি ৯৪ জন ছেলে শিশুর মধ্যে ১ জন অটিজম স্পেকট্রাম সমস্যায় আক্রান্ত।

মেয়ে শিশুর অটিজমের লক্ষণগুলো একটু আলাদা ধরণের এবং আচরণে সমস্যা একটু বেশি থাকে। একারণে তাদের লক্ষণগুলো অনেক সময় উপেক্ষিত থাকে বা ভুলভাবে সনাক্ত হয় যা সনাক্তকরণ ও পরিচর্যা প্রদানের ক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার। যেকোনো শ্রেণী, গোত্র বা সামাজিক অবস্থানের শিশুদের অটিজম হতে পারে।

শারীরিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা, অর্থাৎ শৈশবে অটিজম বাংলাদেশের অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা। এই ধরনের অক্ষমতাগুলোকে জেনেটিক, জন্মগত এবং মেটাবলিজমের জন্মগত ত্রুটির জন্য দায়ী করা যেতে পারে।

জন্মগত রােগ কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম

জন্মগত ত্রুটি সবসময় দৃশ্যমান নয়

জন্মের সময় শিশুকে দেখতে যতখানি সুস্থ মনে হয় আসলেও সে ততখানি সুস্থ কিনা তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়

জন্মের সময় খালি চোখে নবজাতককে সুস্থ মনে হলেও তার মধ্যে অনেকগুলি কনজেনিটাল, মেটাবলিক এবং জেনেটিক রোগ লুকানো থাকতে পারে যার ফলে নবজাতকের নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হতে পারে, যেমন-

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট জন্মের সময় আপনার প্রিয় সন্তান আসলেই সুস্থ কিনা তা জানার সহজ উপায়। 

এরচেয়ে দুঃখজনক কিছু কি হতে পারে যদি হাসপাতাল ছাড়ার পরে জানতে পারেন যে আপনার সন্তানের কোন রোগ আছে যা “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” এর মাধ্যমে নির্ণয় করা যেত?

বিশ্বের সবচেয়ে সফল ও আধুনিক “নিউবর্ন স্ক্রীনিং ” পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর সম্ভাব্য শারীরিক ত্রুটি/রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন

কেন “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট করা গুরুত্বপূর্ণ?

জন্মগত জেনেটিক ও মেটাবলিক রােগে আক্রান্ত শিশুদের জন্মের সময় সাধারনত সুস্থ ও স্বাভাবিক মনে হয়। রােগের লক্ষণ প্রকাশের পূর্বেই নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট রােগগুলিকে সনাক্ত করতে পারে বিধায় দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে সম্ভাব্য অপূরনীয় শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি যেমন বিকলাঙ্গতা, স্নায়বিক সমস্যা, শেখার অক্ষমতা, মানসিক প্রতিবন্ধকতা, এমনকি মৃত্যু থেকে রক্ষা করে শিশুকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন উপহার দেয়া সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ আমেরিকায় প্রতিবছর জন্মগ্রহণ করা ৪০ লক্ষ শিশুর প্রত্যেকের নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট করা হয়। নিউবর্ন স্ক্রীনিংয়ের মাধ্যমে ১২,০০০ শিশুর (প্রতি ৩০০ শিশুর মধ্যে ১জনের) জন্মগত রােগ ধরা পড়ে, যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে যারা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে। এজন্যই “নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট” বিংশ শতাব্দীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাতে আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে গণ্য করা হয়।

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট কতখানি কার্যকর? কখন করতে হবে?

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট এর মাধ্যমে জন্মগত রোগ যেমন কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম ও ইনবর্ন ইরর অব মেটাবলিজম ইত্যাদি শনাক্তের হার প্রতি ৩০০ নবজাকের মধ্যে ১ জন।

এইসব রোগের সনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় দেরি হলে নবজাতকের শারীরিক ও মানসিক গঠন ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি নবজাতকের মৃত্যুও হতে পারে।

সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাধারণত জন্মের ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে “নিউবর্ণ স্ক্রীনিং” টেস্ট করা হয়। যদিও জন্মের ২৪ ঘন্টা পর নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কিছু কিছু রোগ সনাক্ত করা সম্ভব হয়না। রোগাক্রান্ত ও প্রিম্যাচিউর শিশুর ক্ষেত্রে জন্মগ্রহনের ৭ দিন পর পুনরায় নিউবর্ন স্ক্রীনিং করা বাধ্যতামূলক।

কোন কোন ক্ষেত্রে “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট করা অত্যাবশ্যক?

নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে শিশুর জন্মগত জেনেটিক ও মেটাবলিক রােগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বহুগুণ বেশি থাকে বিধায় নিউবর্ণ স্ক্রীনিং টেস্ট করা অত্যাবশ্যক:

যেসব শিশুর নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট করা হয়নি তাদেরও কি পরবর্তীতে এই টেস্ট করা উচিত?

নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট: সাতটি প্রাথমিক অসুখ ও হিমােগ্লোবিনােপ্যাথিস

শিশু মৃত্যুর হারের উপর নবজাতক স্ক্রীনিং এর প্রভাব

দেশ শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি ১০০০) নবজাতকের স্ক্রীনিং কভারেজ প্রতিষ্ঠান
সিঙ্গাপুর >৯৯% পরিবার (৪০%) + সরকার
হংকং (চীন) ১.৮ ৯৯% সরকার
জাপান >৯৯% সরকার
কোরিয়া (দক্ষিণ) ৯৪% সরকার
নিউজিল্যান্ড ১০০% সরকার
অস্ট্রেলিয়া ১০০% সরকার
মালয়েশিয়া ৯৫% সরকারি/বেসরকারি
তাইওয়ান ৬.৩ >৯৯% পরিবার
থাইল্যান্ড ১৩ ৯৭% সরকার
ভারত ৪৩ <৫% ব্যক্তিগত
বাংলাদেশ ৩১ প্রযোজ্য নয় প্রযোজ্য নয়

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট শিশু মৃত্যুহার কমানোর একটি প্রমানিত ব্যবস্থা

আমেরিকার ৫০ বছরের “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্টের অভিজ্ঞতা

বিংশ শতাব্দীর স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনাতে “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্জন হিসাবে স্বীকৃত।

Ref: https://babysfirsttest.org/

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট আপনার সোনামনির সারাজীবনের জন্য অমূল্য উপহার

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং ” পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর সর্বোচ্চ বিকাশ নিশ্চিত করুন

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট কোথায় করবেন?

সর্বপ্রথম বাংলাদেশে “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” পরীক্ষাটি চালু করেছে “অ্যাকুরেট লাইফ কেয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড”

মেডিকেল টেকনোলজি কোম্পানি “অ্যাকুরেট লাইফ কেয়ার” গর্বি ত বাংলাদেশের শিশুদের জন্য এই পরীক্ষাটি চালু করতে পেরে।  অ্যাকুরেট লাইফ কেয়ার মেটাবলিজম সহ উচু মানের প্রতিরোধমূলক স্ক্রীনিং এবং ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপক জেনেটিক মেটাবলিক স্ক্রীনিং পরীক্ষা (নিউবর্ন স্ক্রীনিং) ছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রতিরোধমূলক পরীক্ষা এখানে করা হয় যেগুলো ডায়াবেটিস, ওজন সমস্যা এবং খাদ্য অসহিষ্ণুতা মোকাবেলায় সহায়তা করে।

অ্যাকুরেট লাইফ কেয়ার

“নিউবর্ণ স্ক্রীনিং” টেস্ট করা হয় সহজ পাঁচটি ধাপে

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট প্যাকেজসমূহ

পরীক্ষা রোগ/কন্ডিশন খরচ (টাকা)
নিউবর্ন বেসিক সাতটি কন্ডিশন - CH, CAH, G6PD, CF, PKU, Galactosemia ও Biotinidase ৫০০০
নিউবর্ন স্ট্যান্ডার্ড ১১টি কন্ডিশন - নিউবর্ন বেসিক + Haemoglobinopathies (Sickle Cell Disease, Sickle Cell Trait, Hb Variants ও Beta Thalasemia) ৭৫০০
নিউবর্ন এ্যাডভান্সড TMS ৫২টি কন্ডিশন + CH, CAH, G6PD, CF, PKU, Galactosemia, Biotinidase ও Haemoglobinopathies ১০০০০
নিউবর্ন কমপ্লিট নিউবর্ন বেসিক + Haemoglobinopathies + GCMS 111 ১৫০০০
নিউবর্ন কমপ্রিহেনসিভ নিউবর্ন বেসিক + Haemoglobinopathies + GCMS 111 + TMS 52 ২০০০০
TMS + GCMS ১৬৩ (৫২ + ১১১) টি কন্ডিশন ১৭৫০০
GCMS ১১১ টি কন্ডিশন - Amino Acids, Organic Acids, Fatty Acids, Lactate, Pyruvate, TCA Cycle, Peroxisomal, Purine, Pyrimidine ও Sugar Disorders ১০০০০
TMS ৫২টি কন্ডিশন - Amino Acids, Organic Acids, Fatty Acids ও TCA Cycle, ৯০০০
Haemoglobinopathies Sickle Cell Disease, Sickle Cell Trait, Hb Variants ও Beta Thalasemia ৩০০০

নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট এর সর্বোত্তম পদ্ধতি

সন্তানের ভবিষ্যৎ আপনার হাতেই। নিশ্চিত করুন ওর সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ।

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং ” পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর সর্বোচ্চ বিকাশ নিশ্চিত করুন

“নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সুপারিশকৃত নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট শিশু মৃত্যু হার কমানাের একটি প্রমাণিত ব্যবস্থা। যেসব দেশে নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট হয়ে থাকে সেইসব দেশে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ শিশুতে ১০ জনেরও কম, অথচ বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ শিশুতে ২৫.৭ জন! তাই উলিখিত জন্মগত রােগসমূহ সনাক্তকরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডাসহ বিশ্বব্যাপী ৬০টির বেশি দেশে নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট "বাধ্যতামূলক পরীক্ষা"। 
  • পরীক্ষাগার সুবিধা, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট এর অপরিহার্যতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে পর্যাপ্ত প্রচারের অভাবে বাংলাদেশে এই টেস্টের গুরুত্ব উপলব্ধি করা হয়নি। বাংলাদেশে অনেক শিশু জন্মগত জেনেটিক ও মেটাবলিক রােগে আক্রান্ত হলেও নিউবর্ণ স্ক্রিনীং টেস্ট করানাে হয়না বিধায় তাদের রােগগুলি যথাসময়ে সনাক্ত হয়না। যার ফলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত শিশুরা মৃত্যু মুখে পতিত হয়। 
  • আসুন নিউবর্ণ স্ক্রিনীং টেস্ট সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলি এবং শিশুর স্বাস্থ্যজ্জোল ভবিষ্যত নিশ্চিত করি।
  • নিউবর্ণ স্ক্রিনীং টেস্টের মাধ্যমে সনাক্ত হওয়া বেশিরভাগ শিশুর পারিবারিক ইতিহাস থাকেনা এবং জন্মের সময় তাদের পুরােপুরি সুস্থ বলে মনে হয়। এই কারণে প্রতিটি সুস্থ শিশুরই নিউবর্ণ স্ক্রিনীং করা প্রয়ােজন। সেজন্যই যেসব শিশুদের স্ক্রীনিং টেস্ট করা হয়নি এমনকি তাদেরও বর্তমান বয়সে স্ক্রীনিং টেস্টটি করতে সুপারিশ করা হয়।
  • সাধারণত জন্মের ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে “নিউবর্ণ স্ক্রীনিং” টেস্ট করা হয়। যদিও জন্মের ২৪ ঘন্টা পর নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কিছু কিছু রোগ সনাক্ত করা সম্ভব হয়না। রোগাক্রান্ত ও প্রিম্যাচিউর শিশুর ক্ষেত্রে জন্মগ্রহনের ৭ দিন পর পুনরায় নিউবর্ন স্ক্রীনিং করা বাধ্যতামূলক।
  • যেসব মা-বাবা শিশুর রক্ত প্রদানে অনিচ্ছুক, কর্ড ব্লাড থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেও তাদের “নিউবর্ণ স্ক্রীনিং” টেস্ট করা হয়। তবে এক্ষেত্রে কিছু রোগ নির্নয় সম্ভব হয় না।
  • “নিউবর্ন স্ক্রীনিং” টেস্ট একটি অতি সাধারণ ও নিরাপদ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে জন্মের ৪৮-৭২ ঘন্টা পর একজন নার্স বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেডিকেল স্টাফ শিশুটির গােড়ালি/অন্য কোন শিরা থেকে বিশেষ ধরনের ফিল্টার পেপারে রক্তের নমুনা এবং শিশুর ডায়াপারের ভেতর বিশেষ ধরনের ফিল্টার পেপার রেখে মূত্রের নমুনা সংগ্রহ করেন। সংগৃহিত নমুনা নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্টের জন্য CAP (College of American Pathologists) অনুমােদিত পরীক্ষাগারে (Laboratory) পাঠানাে হয়। 
  • যদি সংগৃহিত নমুনাতে কোন সমস্যা পাওয়া যায় বা যদি কাঙ্খিত মানের নমুনা না নেয়া হয়ে থাকে তবে একাধিকবার নমুনা সংগ্রহের প্রয়ােজন হতে পারে। দ্বিতীয়বার নমুনা সংগ্রহের অনুরােধ করা হলে দেরি না করে অনুরােধ রক্ষা অত্যাবশ্যক। দ্বিতীয়বার নমুনার জন্য বলার অর্থ এই নয় যে শিশুটির মধ্যে কোন সমস্যা আছে।
  • রােগগুলি বিরল বিধায়, অধিকাংশ শিশুর স্ক্রীনিং টেস্ট এর ফলাফল নেগেটিভ হয়। যে স্বল্প সংখ্যক শিশুর ক্ষেত্রে ফলাফল পজেটিভ হয়, তাদের ক্ষেত্রে আশু চিকিৎসা নিশ্চিত করে নবজাতককে অপূরণীয় ক্ষতি, এমনকি মৃত্যু ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা হয়। 
  • শিশুর এক বা একাধিক রােগের ঝুঁকি থাকতে পারে। কোন বিশেষে একটি রােগের ক্ষেত্রে পজিটিভ বা ইতিবাচক ফলাফল অন্য মেডিক্যাল/স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ঝুঁকি বৃদ্ধির ইঙ্গিত করতে পারে। সে ঝুঁকির বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরেকটি টেস্ট প্রয়ােজন হতে পারে। যার প্রয়ােজনীয়তা আপনার ডাক্তার অবিলম্বে আপনাকে জানাবেন।
  • নেগেটিভ রেজাল্টই নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্টের সর্বোত্তম ফল।
  • যদি রােগ/রােগগুলাে আপনার শিশুর মধ্যে পাওয়া যায় তবে কখনাে কখনাে শিশুর খাবারের পরিবর্তনের মাধ্যমে, কখনাে ওষুধের মাধ্যমে অথবা খাবার পরিবর্তন এবং ওষুধ উভয়ের মাধ্যমে আপনার শিশুকে দিতে পারে সুস্থ সাবলীল জীবন। উদাহরণস্বরূপ গ্যালাকোটোসেমিয়া “গ্যালাকটোজ সীমিত ডায়েট (galactose restricted diet)” দ্বারা চিকিৎসা করা হয়। আবার কনজেনিটাল হাইপােথাইরয়েডইজম চিকিৎসা করা হয় লিভােথাইরক্সিন নামক ওষুধ দ্বারা। 
  • কিছু রােগ এমন পর্যায়ে পৌছে যা নিবারণ করা সম্ভব হয় না। তবে দ্রুততম সময়ে সনাক্ত করা গেলে, উল্লেখযােগ্যভাবে প্রশমন করা যায়। এসব ক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসক জেনেটিক কাউন্সেলিং- এর । মাধ্যমে আপনাকে সর্বোত্তম চিকিৎসা ব্যবস্থা বেছে নিতে সাহায্য করবেন।
  • উল্লেখযােগ্যভাবে শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস করে জীবন বাঁচায়: যেসব জন্মগত রােগ নির্ণয়ের জন্য নিউবর্ণ। স্ক্রীনিং টেস্ট করা হয়, সঠিক সময়ে সনাক্ত ও চিকিৎসা হলে আক্রান্ত শিশুকে মৃত্যুঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।
  • পুনরাবৃত্তিমূলক হাসপাতালে ভর্তি এবং ফলােআপ চিকিতসা খরচ হ্রাস করে: খালিচোখে এবং প্রচলিত ল্যাব পরীক্ষাতে এইসব জন্মগত রােগ নির্ণয় করা যায় না বিধায় আক্রান্ত শিশুকে বারবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় এবং নানাবিধ পরীক্ষা নিরিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়, যা ব্যায়বহুল। কম্প্রিহেনসিভ/ এক্সপান্ডেড নিউবর্ণ স্ক্রীনিং টেস্ট প্রতিরােধযােগ্য এই সব রােগ থেকে আপনার সন্তানকে সুরক্ষিত করার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুযােগ করে দেয়। 
  • মানসিক প্রশান্তি: নিউবর্ন স্ক্রীনিং টেস্ট এর নেগেটিভ ফল আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে আপনাকে দেয় মানসিক প্রশান্তি।
  • নিউবর্ন স্ক্রিনীং টেস্ট ৭ টি (বেসিক/প্রাথমিক, যে সকল রােগের প্রাদুর্ভাব সর্বোচ্চ) থেকে ১৩০ টি (কমপ্রিহেনসিভ/একসপান্ডেড) জন্মগত জেনেটিক ও মেটাবলিক রােগ নির্ণয় করে থাকে।

আপডেট পেতে যুক্ত হোন

সর্বশেষ খবর এবং বিশেষ অফার পেতে আমাদের সাথে থাকুন

ঠিকানা

সুইট ৩এ, রাহবার টাওয়ার, রিং রোড, আদাবর, ঢাকা ১২০৭, বাংলাদেশ

ইমেইল

info@accuratelifecare.com

Shopping Cart
হোম
নিউবর্ন স্ক্রিনিং
সকল টেস্ট
0
কার্ট
Scroll to Top